কক্সবাজারে কোরবানে চাল পাচ্ছে ১ লাখ ৭৫ হাজার পরিবার

ডেস্ক রিপোর্ট ◑ পবিত্র ঈদুল আযহা তথা কোরবানের ঈদ উপলক্ষ্যে জেলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হচেছ। এবার চাল বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় কমে যাওয়ার কারণে প্রতি পরিবার এ বছর চাল বরাদ্দ ৫ কেজি করে কম পাচ্ছে।

এ ঈদে জেলার ৭১ ইউনিয়নের ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩২৩ টি পরিবারের জন্য ১৫৯৩.৩২০ মে.টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে এবং জেলার ৪টি পৌরসভার ১৫৪০৪টি কার্ডের বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫৪.৪০ মে.টন চাল।

জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মোঃ মাহবুব হাসান জানিয়েছেন, প্রদত্ত বরাদ্দ প্রায় সকল ইউনিয়ন পরিষদে এবং পৌরসভায় পৌছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং উপকারভোগিদের তালিকা যাছাই বাছাই এর কাজ চলছে। ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে বিতরণ কার্যক্রম শেষ করা হবে।

জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কার্যালয়ের প্রধান সহকারি মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, পবিত্র ঈদুল আযহার বিশেষ বরাদ্দের আওতায় অসহায় ও দুঃস্থ জনগোষ্ঠির জন্য ঈদ উপলক্ষ্যে ভিজিএফ কর্মসূচিতে জেলায় সাড়ে ৭ লাখ গরীব প্রান্তিক মানুষের জন্য ১ হাজার ৭শ ৪৭ মে.টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে । এতে প্রতি পরিবার ১০ কেজি করে চাল পাচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলার ৭১ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের পাশাপাশি ৪টি পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের উপকার ভোগিদের তালিকা প্রস্তত করতে বলা হয়েছে।

এদিকে উপকারভোগিদের তালিকা প্রণয়নে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মানতে জনপ্রতিনিধিদের  নির্দেশ দেওয়া হয় তার অন্যতম হল- ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ি কার্ড পুনঃবিভাজন করতে হবে তা সংসদ সদস্যদের জানাতে হবে, দুঃস্থ , অতিদরিদ্র, ব্যক্তি/পরিবারকে এ সহায়তা দিতে হবে, তবে বন্যায় আক্রান্তদের কিংবা অন্যান্য দূর্যোগে পতিতদের অগ্রাধিকার দিতে হবে, ৭০ শতাংশ মহিলা তালিকাভুক্ত করতে হবে, ভুমিহীন, দিনমজুর, উর্পাজনক্ষম পুরুষবিহীন পরিবার, স্বামী পরিত্যাক্ত, তালাকপ্রাপ্ত, ভিক্ষাবৃত্তির উপর নির্ভরশীল, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, প্রাকৃতিক দূর্যোগে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে অগ্রাধিকার দিয়ে তালিকাভুক্ত করতে হবে।

উপজেলা ভিত্তিক উপকারভোগির সংখ্যা এবং চাল বরাদ্দের পরিমান হলো, চকরিয়ায় ১৮ ইউনিয়নে ২৪,৬৮৮ কার্ডের তথা পরিবারের জন্য ২৪৬.৮৮০ মে.টন। কক্সবাজার সদরের ১০ ইউনিয়নের ২০,২৮৮ পরিবারের জন্য ২০২.৮৮০ টন। কুতুবদিয়ায় ৬ ইউনিয়নের ১৩,৪৭০ পরিবারের জন্য ১৩৪.৭০০ মে.টন। মহেশখালীর ৮ ইউনিয়নের  ২২,৮৪০ পরিবারের জন্য ২২৮.৪০০ মে.টন।

পেকুয়ার ৭ ইউনিয়নের ১৬,৪০৪ পরিবারের জন্য ১৬৪.৪০ মে.টন। রামুর ১১ ইউনিয়নের ২০,১৭৮ পরিবারের জন্য ২০১.৭৮০ মে.টন। টেকনাফের ৬ ইউনিয়নের ২৩,৫৬১ পরিবারের জন্য ২৩৫.৬১০ মে.টন। উখিয়ার ৫ ইউনিয়নের ১৭,৮৯৪ পরিবারের জন্য ১৭৮.৪৯০ মে.টন চাল ।

অপরদিকে কক্সবাজার পৌরসভার ৪৬২১টি কার্ডের ৪৬.২১০ টন, চকরিয়া পৌরসভার ৪৬২১ কার্ডের জন্য ৪৬.২১০ টন, মহেশখালী পৌরসভার ৩০৮১ পরিবারের জন্য ৩০.৮১০ টন এবং টেকনাফ পৌরসভার ৩০৮১ পরিবারে জন্য ৩০.৮১০ টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

চাল বরাদ্দ ও বিতরণের প্রস্তুতি বিষয়ে জেলা ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতির সভাপতি সদরের পিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ শিহাব উদ্দিন জানান, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং প্রকৃত দরিদ্র উপকারভোগিদের তালিকা প্রস্তুত করতে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি এবং সে অনুযায়ি তালিকা প্রনয়ণ সম্পন্ন হবে শিগ্রই। আগামি ১ সপ্তাহের মধ্যে বিতরণ শেষ করবেন বলে তিনি জানান।

সরকার ঈদে দরিদ্রদের মুখে হাসি ফুটাতে উক্ত ভিজিএফ কর্মসূচি চালু করেছে যার সফলতা নির্ভর করছে জনপ্রতিনিধিদের সততার উপর। তবে প্রতিটি ইউনিয়নে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দাবি করে চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছ থেকে দরিদ্রদের বরাদ্দকৃত চাল জোরপূর্বক ভাগ বসান এমন অভিযোগ ও রয়েছে।

দরিদ্রদের চাল যেন সঠিক উপকারভোগি পায় সে বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।